May 17, 2024, 8:04 am

বরগুনায় শীতের শুরুতে লেপ-তোশক তৈরি শুরু

বরগুনা প্রতিনিধি: শীত আসছে। দিনে গরম, রাতে একটু ঠান্ডা; আর ভোরে শীতল স্নিগ্ধ বাতাস। ভোররাতের কুয়াশা, সাতসকালে ঘাস-পাতার ওপর জমে থাকা শিশিরকণা জানিয়ে দেয় শীতের আগমনী বার্তা।

শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে বরগুনায় লেপ-তোষক প্রস্তুতকারী ধুনকারদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। একই সঙ্গে গ্রামের বিভিন্ন পরিবারে পড়ে গেছে লেপ, কাঁথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং রোদে শুকানোর ধুম। অনেক পরিবারের গৃহবধুরা আবার মজুরির বিনিময়ে কাঁথা তৈরি করে দিয়ে সংসারে বাড়তি উপার্জন করবেন।

লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মালিক-শ্রমিক, ধুনকাররা তুলাধোনায়, লেপ-তোশক তৈরির সেলাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তারা জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই ক্রেতারা লেপ-তোষকের দোকানে পছন্দমতো লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার দিচ্ছেন। ধুনকার, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, ভালো মুনাফা এবং বেশি বিক্রির আশায় এ সময়টাতে দিন-রাত পরিশ্রম করবেন। ক্রেতারাও লেপ-তোশক তৈরির জন্য ভিড় করছেন। শহরসহ উপজেলার ছোট-বড় হাটবাজারগুলোয় জাজিম, বালিশ, লেপ, তোশক তৈরি ও বিক্রির কাজে শতাধিক ধুনকার, ব্যবসায়ী নিয়োজিত রয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোশক তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি। বরগুনা জেলা শহরসহ ছয়টি উপজেলায় ৩০০টির বেশি লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের কারিগররা প্রস্তুত। আমতলী শহরের লেপ-তোশক দোকানের মালিক বশির তালুকদার জানান, সারা বছরের মধ্যে এ শীত মৌসুমেই তারা কাজের বেশি অর্ডার পান। ফলে এ সময় তাদের কাজ বেশি করতে হয়। এক মৌসুমের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছর চলতে হয়।

ইসরাফিল মিয়া নামের বেতাগী শহরের অন্য এক দোকান মালিক জানান, কাপড়ের মান বুঝে লেপ-তোশকের দাম নির্ধারণ করা হয়। গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর লেপ-তোষকের দাম একটু বেশি পড়বে। কেননা এ বছর কাপড় ও তুলা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

বরগুনার কারিগর সিদ্দিক মিয়া জানান, শীত শুরু হতে না হতেই তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। তারা ৪-৫ হাতের একটি লেপ ২ ঘণ্টায় তৈরি করে দিতে পারেন। লেপ-তোশকের দোকানের মালিকরা আরও জানান, শীত মৌসুমে প্রত্যেকটি দোকানে ২ শতাধিক লেপ তোশক ও জাজিম কেনাবেচা হয়।

এদিকে শীত মৌসুম শুরুতেই জেলার বিভিন্ন গ্রাম্য পরিবারের গৃহবধূরা কাঁথা সেলাই শুরু করে দিয়েছেন। অনেক পরিবারই রয়েছে যারা কাঁথা সেলাইয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ বা পরিবারে বাড়তি আয় করে থাকে। বৈঠাকাঠা গ্রামের মরিয়ম বেগম জানান, শহরের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের কাছে কাঁথা সেলাই করে দেয়ার জন্য কাপড় সরবরাহ করেন। নকশা ভেদে এক একটি কাঁথা সেলাই করতে মজুরি বাবদ দেয়া হয় ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। সাংসারিক ঝক্কিঝামেলা থাকলেও তার মতো অনেক গৃহবধু কাজের ফাঁকে ফাঁকে এভাবে প্রতি সিজনে ১০ থেকে ১৫টি কাঁথা সেলাই করে নগদ আয় করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD